শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বাঘাইছড়িতে পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা বিষয়ে সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের বিবৃতিতে দোষীকে আড়ালের চেষ্টা !

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, শনিবার

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের লক্ষীছড়িতে সেনা সদস্য কর্তৃক এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখা দেওয়ায় গতকাল শুক্রবার(২১ ফেব্রুয়ারী) সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সংবাদ মাধ্যমে এক বিবৃতি প্রদান করে। যা জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠে আজ ২২ ফেব্রুয়ারী শনিবার প্রকাশিত হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের লক্ষ্মীছড়ি আর্মি ক্যাম্পের টহল দলের একজন সদস্য টহলরত অবস্থায় লক্ষ্মীছড়ি বাজারসংলগ্ন দীন মোহন চাকমার বাড়ির আঙিনায় উপস্থিত হলে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে এর অবসান ঘটে। কিন্তু পার্বত্যাঞ্চলের একটি বিশেষ মহল এ ঘটনাকে বিকৃত ও অতিরঞ্জিত করে ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছে। ঘটনাটি সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হওয়ার পরপরই উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উল্লিখিত অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

আইএসপিআরের উক্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে "লক্ষ্মীছড়ি আর্মি ক্যাম্পের টহল দলের একজন সদস্য টহলরত অবস্থায় লক্ষ্মীছড়ি বাজারসংলগ্ন দীন মোহন চাকমার বাড়ির আঙিনায় উপস্থিত হলে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়" বলে উল্লেখ করা হলেও ঘটনার শিকার ওই নারী ও স্থানীয় এলাকার জনগণের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, সেদিন স্বামীর অনুপস্থিতিতে ওই নারী একাই বাড়িতে চাউল বাছাইয়ের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় হঠা সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় (টহলরত অবস্থায় নয়) উক্ত ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার তার এক সহযোগীকে নিয়ে ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং পিছন দিক থেকে ঝাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।  পরে ওই নারী চিকার দিলে গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসায় তিনি কোন রকমে সম্ভ্রমহানি থেকে রক্ষা পান। 

এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজনকে সেনাক্যাম্পে ডেকে পাঠিয়ে ঘটনাটি প্রকাশ না জন্য বলা হয় এবং ঘটনাটি প্রমাণিত হলে ওই সেনা সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়।

কিন্তু ঘটনার ৪দিন অতিবাহিত হলেও ওই সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনপ্রকার শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে 'ঘটনাটি নিয়ে বিশেষ মহল ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা করছে' বলে অভিযোগ করে আইএসপিআর থেকে সংবাদ মাধ্যম বিবৃতি দিয়ে প্রকৃত অর্থে দোষীকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করছেন।

উল্লেখ্য, উক্ত ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সাজেক নারী সমাজ, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানায়।