মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে পাহাড়িদের উপর সেটলার হামলায় আহত ২, ইউপিডিএফ’র নিন্দা ও প্রতিবাদ

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, মঙ্গলবার
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাধীন কমলছড়িতে আজ ২৫ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সেটলার বাঙালিদের হামলায় ২ জন পাহাড়ি গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা হলেন, পান্ডক চাকমা (৩২) পিতা মৃত বিনয় কুমার চাকমা ও আনন্দ লাল চাকমা(৫০) পিতা মৃত সূর্য কুমার চাকমা। তারা উভয়েই কমলছড়ি মুখ পাড়ার বাসিন্দা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দু’জনকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, আজ মঙ্গলবার সকালে বাঙালি ছাত্র পরিষদের ব্যানারে সেটলার বাঙালিরা খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে মানবন্ধন শেষে গাড়িযোগে মির্ছিল সহকারে ভুয়োছড়ি গুচ্ছগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। যাবার পথে কমলছড়ি এলাকায় পৌঁছলে তারা পাহাড়িদের বিরুদ্ধে উত্তেজনামূলক ও অশ্লীল শ্লোগান দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরপর সেটলার বাঙালিরা কমলছড়ি গ্রামে ঢুকে পাহাড়িদের উপর হামলা চালায়। এসময় তারা পান্ডক চাকমাকে মাথায় কুপিয়ে ও আনন্দ লাল চাকমাকে লাঠিসোটা দিয়ে আঘাত করে। এতে দু’জনই গুরুতর আহত হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হামলার সময় সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকলেও তারা সেটলারদের সহযোগিতা দেয় এবং আনন্দ লাল চাকমাকে সেটলারদের পাশাপাশি এক আনসার সদস্য কর্তৃক লাঠিপেটা করা হয়েছে। ফলে সেটলাররা হামলা চালাতে উসাহী হয়। এ হামলার বেশ কিছুক্ষণ পর খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও উত্তেজনা নিরসনে ব্যর্থ হয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ ধরে পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। পরে খাগড়াছড়ি সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা সহ জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এ ঘটনায় এলাকার জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা এক বিবৃতিতে এ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ মহলের উস্কানিতে এভাবে পাহাড়িদের উপর বার বার সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে। এ যাবত যেসব সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে সবগুলোতেই সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণিত হয়েছে। আজকের সংঘটিত হামলার ঘটনাটিও তার ব্যতিক্রম নয়। হামলার প্রথম দিকে সেনাবাহিনী যদি সেটলারদের সহযোগিতা না দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতো তাহলে এত উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।
বিবৃতিতে তিনি হামলাকারী সেটলারদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, পাহাড়িদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান, সেটলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন ও ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের সংঘটিত না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারী কমলছড়িতে হত্যার শিকার হওয়া সবিতা চাকমার আজ সাপ্তাহিক ক্রিয়া অনুষ্ঠান চলছিলো। উক্ত হামলার ঘটনার পর সাপ্তাহিক ক্রিয়া অনুষ্ঠানটিও সম্পর্ণ ভন্ডুল হয়ে যায়। সূত্র: সিএইচটিনিউজ.কম