সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১৬ জানুয়ারি ২০১৩,
বুধবার
হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমা
অপহরণ বিষয়ে সিআইডির তদন্ত রিপোর্টের উপর শুনানী শেষে আজ ১৬ জানুয়ারি বুধবার রাঙামাটি
মুখ্য বিচারিক হাকিম(সিএমএম) আদালত কর্তৃক এসপি'র নেতৃত্বে পুনঃতদন্তের নির্দেশদানকে দীর্ঘসূত্রীতা, কালক্ষেপন ও চিহ্নিত অপহরণকারীদের রার অপপ্রয়াস বলে মন্তব্য
করেছে পার্বত্য চট্টগামের সাত সংগঠন। আদালতের দেয়া এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আগামী শুক্রবার পার্বত্য
চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভ ও রোববার রাঙামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও নৌপথ
অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনগুলো।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, সাজেক নারী সমাজ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক
স্কোয়াড-এর পক্ষে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা স্বাক্ষরিত
এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানানো হয়।
সংবাদপত্রে প্রদত্ত বিবৃতিতে সাত সংগঠনের
নেতৃবৃন্দ সিএমএম কোর্টের আদেশে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং প্রশ্ন রেখে বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ কিছু কূল কিনারা করতে পারে
নি। আর পুলিশের এসপি কিভাবে তা করতে সক্ষম হবেন। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে
চিহ্নিত অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি পুনঃব্যক্ত করেন এবং অন্যথায় তা থেকে
উদ্ভূত যে কোন পরিণতির জন্য সরকার-প্রশাসনকে দায়ী হতে হবে বলে তারা কঠোর হুঁশিয়ারি
উচ্চারণ করেছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, চিহ্নিত কল্পনা অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও বিচার আজ শুধু কল্পনা
চাকমার ভাইদের বা তাদের পারিবারের দাবি নয়। এ দাবি সকল নিগৃহীত নারীর দাবি তথা পাহাড়ি-বাঙালি-সান্তাল-গারো-মুনিপুরী
বলতে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের অধিকার বঞ্চিত সংখ্যালঘু জাতি ও প্রান্তিক
জনগোষ্ঠীর মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সাথে যুক্ত। কল্পনা অপহরণ একটি
জাতীয় ইস্যু। কল্পনা অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি প্রদান গোটা দেশের গণতান্ত্রিক
ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের অংশ।
উল্লেখ্য, হিল উইমেন্স
ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমা ১৯৯৬ সালের ১১ জুন দিবাগত রাতে সেনা কমান্ডার
লেঃ ফেরদৌস ও তার সহযোগীদের দ্বারা অপহৃত হন। অপহরণের পর
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুল জলিলকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট
একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ কমিটি রিপোর্ট দাখিল করলেও তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা
হয়নি।
এরপর ২০১০ সালের ২১ মে বাঘাইছড়ি থানার তৎকালীন
এস আই ফারুক আহম্মদ অপহরণকারীদের সনাক্ত না করে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল
করেন। মামলার বাদী কল্পনা চাকমার ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা এ
রিপোর্টের বিরুদ্ধে নারাজী আবেদন জানালে আদালত সিআইডি দ্বারা তদন্তের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের
(সিআইডি) কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল্লাহ কল্পনা
চাকমার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি,
ভবিষ্যতেও খুঁজে পাওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে চূড়ান্ত তদন্ত
রিপোর্ট দাখিল করেন। এ
রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ১৩ জানুয়ারি
রাঙামাটি মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ১ম দফা শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১৬ জানুয়ারি আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য রাঙামাটি জেলা
এসপিকে এ আদেশ দেন।#