সিএইচটি নিউজ
বাংলা, ৬ ডিসেম্বর ২০১৩, শুক্রবার
বৃহত্তর পার্বত্য
চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ১৩তম কাউন্সিল আজ ৬
ডিসেম্বর শুক্রবার খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে
বিপুল চাকমাকে সভাপতি, রজেন্টু চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও রতন স্মৃতি চাকমাকে
সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন জেলা কমিটি গঠন করা হয়।
“আন্দোলন
ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে যুক্ত সরকারের দালাল সুবিধাবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীলদের বিরুদ্ধে
রুখে দাঁড়ান এবং অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে পিসিপি’র পতাকাতলে সমবেত হোন” এই শ্লোগানে সকাল সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে
উমেশ চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক
ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সংগঠক রিকো চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব
ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয়
সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং
মারমা। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাংগঠনিক
সম্পাদক রজেন্টু চাকমা।
সম্মেলন
শুরুতে শহীদদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর আন্দোলন করতে গিয়ে
যারা গ্রেফতার হয়ে পরে মুক্তিলাভ করেছেন তাদেরকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সম্মেলনে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলা থেকে পিসিপি’র নেতা-কর্মীরা যোগ দেন।
সম্মেলনে
বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার একটি ফ্যাসিবাদী সরকারে পরিণত হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামের জনসভায় সন্ত্রাসীর ভাষায় হুমকি দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন। এই
সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সংখ্যালঘু
জাতি ও জনগণের উপর বাঙালী জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়েছে। সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে পাহাড়ি
জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে।
বক্তারা
আরো বলেন, সরকার তথা শাসকগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র, যুব ও নারী সমাজকে
বিপথে পরিচালিত করতে নানা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। মদ, গাঁজা, হিরোইন আসক্ত করে
ছাত্র-যুব সমাজকে আন্দোলন বিমূখ করার অপচেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে ছাত্র-যুব ও নারী
সমাজকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
বক্তারা
বলেন, প্রতিটি সরকারই পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টি করে পাহাড়িদের উপর
নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার পাহাড়িদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি
করে “জুম্মের দিয়ে জুম্মো ধ্বংসের” নীল নক্সা বাস্তবায়ন করছে। মুখে শান্তির কথা
বলে এই সরকার পাহাড়িদের চিরতরে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সাজেক,
খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও সর্বশেষ তাইন্দংয়ে পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো
হয়েছে। এই সরকারই সন্তু লারমাকে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে
রেখেছে।
বক্তারা
বলেন, যারা আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ তথাকথিত জাতীয় রাজনীতির নামে পাহাড়িদের বিভ্রান্ত
করছে তাদেরকে ঘৃণা সহকারে বর্জন করতে হবে।
বক্তারা
আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সারাদেশে নারী নির্যাতন সহ সংখ্যালঘু জাতি ও
জনগণের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে। সংখ্যালঘু
হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর প্রতিনিয়ত হামলার ঘটনা ঘটছে। সরকার কিছুতেই এসবের দায়
এড়াতে পারে না।
বক্তারা
সকল প্রকার নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার
জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
সম্মেলন
শেষে স্বনির্ভর বাজার থেকে নতুন কমিটির নেতৃত্বে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি
নারাঙহিয়া, উপজেলা হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। এতে নতুন
কমিটির সভাপতি বিপুল চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক রজেন্টু চাকমা বক্তব্য রাখেন। এরপর র্যালিটি
আবারো স্বনির্ভর বাজারে এসে শেষ হয়।

