বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০১৩

খাগড়াছড়ির ৬৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট


সিএইচটি নিউজ বাংলা, ৯ মে ২০১৩, বৃহস্পতিবার
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি জেলায় ৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী চারজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন তিনজন। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে নিজেদের উদ্যোগে আলাদা শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

পাঠদান স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বদলিকৃত শিক্ষকদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৩৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ৬৯টি বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে রয়েছেন তিনজন শিক্ষক। একটিতে রয়েছে দুইজন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে চারজন শিক্ষক ছিল। পরে পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে কিছু শিক্ষক তকালীন উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের যোগসাজসে তাদের পদসহ খাগড়াছড়ি শহরের আশেপাশে সুবিধাজনক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে  গেছেন।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খবংপড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয়া খীসা বলেন, তিন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান স্বাভাবিক রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। প্রত্যেক শিক্ষককে বিরতিহীনভাবে ক্লাস নিতে হয়। এছাড়াও আমাকে অফিসের কাজে প্রায়ই উপজেলা, জেলা অফিসে এবং অনেক সময় পৌরসভার নানা কর্মসূচিতেও ব্যস্ত থাকতে হয়।

খাগড়াছড়ি সদরের নুনছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোলনাথপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ নম্বর গড়গর্য্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পল্টন জয়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, এসব বিদ্যালয়ে আগে চারজন করে শিক্ষকের পদ ছিল। পরে তকালীন উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের আদেশে বিদ্যালয়গুলো থেকে একজন করে শিক্ষক অন্যত্র বদলি করা হয়। এসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বদলিকৃত শিক্ষকদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

পল্টন জয়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুগম ত্রিপুরা বলেন, তিনজন শিক্ষক দিয়ে সুষ্ঠুভাবে পাঠদান সম্ভব নয়।

আমি অনেকবার বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কোনো কাজ হয়নি।  কোনো উপায় না দেখে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকদের উদ্যোগে একজন অতিরিক্ত শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ শিক্ষককের বেতন অভিভাবকরা  দেন।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সত্য বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, শিক্ষক সংকট নিয়ে অনেকবার বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছি। কিন্তু আমাদের এ দাবির কথা কেউ শোনেননি।

এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ পোদ্দার বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে শিক্ষককের পদ বাড়ানো হবে। এ লক্ষ্যে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলায় ৫৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,  যেসব বিদ্যালয়ে  শিক্ষক সংকট রয়েছে, সেখানে নতুন নিয়োগকৃতদের এখনই নিয়োগ দেওয়া হবে না।

তিনি আরও জানান, বদলি হওয়া শিক্ষকদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নেই। এসব ব্যাপারে যে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন পার্বত্য জেলা পরিষদ। (সূত্র: সুপ্রভাত বাংলাদেশ)