শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৩

বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীর প্রয়াণে ইউপিডিএফ-এর গভীর শোক প্রকাশ

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১২ এপ্রিল ২০১৩, শুক্রবার
চট্টগ্রাম : পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনগণের সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর চট্টগ্রাম ইউনিটের সংগঠক মিঠুন চাকমা আজ ১২ এপ্রিল শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী মাস্টার দা সূর্যসেনের সাথী বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন । 
বিবৃতিতে তিনি বলেন, তার মৃত্যুতে ইতিহাসের একটি গৌরবময় জীবন্ত অধ্যায়ের একজন  সাক্ষীর পতনই হলো। তাঁর স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে এসে পার্বত্য জনগণের লড়াইয়ের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, লড়াই ছাড়া কোন জাতিই মুক্তি লাভ করতে পারেনা। তিনি আরো বলেছিলেন, তোমরা যদি অধিকার আদায় করতে চাও তবে তোমাদেরও লড়াই করতে হবে।


বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী ১৯১১ সালের ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার উত্তর ভূর্ষি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রিটিশ বিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম নায়ক মাস্টার দা সূর্যসেনের বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৩০ সালে চট্টগ্রামে মাস্টারদা সূর্য সেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেন এবং চট্টগ্রামকে চারদিনের জন্য ব্রিটিশ শাসন হতে স্বাধীন রাখতে সক্ষম হন। তিনি বিপ্লবী অনন্ত সিং ও গণেশ ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার দখল অভিযানের একজন ছিলেন। পরে জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। তাঁরা ১৮ থেকে ২২ এপ্রিল চার দিন চট্টগ্রামকে ব্রিটিশ ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন করে রেখেছিলেন। এসময় বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। পরে তিনি ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে আটক হন। দীর্ঘ ৫ বছর কারাভোগের পর তিনি ১৯৩৮ সালে মুক্তি পান।

১৯৪১ সালে তিনি আবার কারারুদ্ধ হন এবং ১৯৪৫ সালে ছাড়া পান। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার কারণে অনেকেই দেশ ছেড়ে গেলেওত তিনি তার জন্মভুমিকে ছাড়তে পারেন নি। আজীবন তিনি চট্টগ্রামের রহতমগঞ্জের ছোট একটি বাসায় তার জীবন সাদাসিধে জীবন অতিবাহিত করেছেন।
 ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল বুধবার মধ্যরাতে ভারতের কলকাতায় বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীর প্রয়াণ হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ১০৩ বছর।
আজ ১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ চট্টগ্রামে আনা হয়। জে এম সেন হলে ইউপিডিএফ-এর একটি প্রতিনিধিদল তাকে ফুল দিয়ে  শেষ শ্রদ্ধা জানায়।।
----