বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৩

পার্বত্য চট্টগ্রামে শিশু খুন, ধর্ষন ও মাটিরাঙ্গার প্রাণকুমার পাড়ায় সেটলার হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১১ এপ্রিল ২০১৩, বৃহস্পতিবার
চট্টগ্রাম: খাগড়াছড়িতে মাটিরাঙ্গার প্রাণকুমার পাড়ায় সেটলার হামলা, দিঘীনালার মেরুঙে চম্পা চাকমা তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পরে খুন, ও রামগড়েগৃহবধূকে ধর্ষণপ্রচেষ্টার প্রতিবাদে তিন পাহাড়ি সংগঠন আজ বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভ মিছিলটি নিউমার্কেট এলাকার দোস্ত বিল্ডিঙ থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। শহীদ মিনারে এক সংক্ষিপ্ত সামবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সুকৃতি চাকমা, বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান, এচিঙ মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সুমন চাকমা ও শ্রমিক নেতা অর্পণ চাকমা।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের ঐতিহ্যবাহী বৈসু-সাংগ্রাইং-বিজু(বৈসাবি) উসব সমাগত। ঠিক এই সময়ে শিশু খুন-ধর্ষন,
গৃহবধূকে ধর্ষন প্রচেষ্টা ও মাটিরাঙ্গার প্রাণকুমার পাড়ায় ২৭ গ্রামবাসীকে তাদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ প্রচেষ্টা কেনোভাবেই মেনে নেয়া যায়না।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবসময় দেখা গিয়েছে, বৈসাবি উ
সব কাছাকাছি আসলেই নানাভাবে পার্বত্য পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনাগুলো সেই চক্রান্তেরই অংশ হতে পারে বলে নেৃতবৃন্দ সমাবেশ থেকে অভিযোগ করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন এই সময়ে বা অন্য যেকোনো সময়ে পাহাড়ি ব্যতীত সেটলার বাঙালি কেউ মিথ্যাভাবে হামলার গুজব বা হামলার শিকার হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। সাম্প্রদায়িক উস্কানি  দেয়া হয় বা সাম্প্রদায়িক হামলা করার চেষ্টা করা হয় এবং মাঝে মাঝে দাঙ্গা-হাঙ্গামাও সৃষ্টি করা হয়। তবে দুস্কৃতিকারীরা বর্তমানে পাহাড়ি জনগণের উপর হামলা খুন-ধর্ষন বা বসতভিটা দখল করে পাহাড়ি জনগণকে উস্কে দিয়ে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে সামবেশ থেকে বক্তারা অভিযোগ করেন। বক্তারা প্রশাসনের প্রতি এই ধরণের অপচেষ্টা প্রতিরোধে ভুমিকা রাখার জন্য দাবি জানান। বৈসাবি উসবকালীন সেটলার বা সাম্প্রদায়িক উস্কানীদাতা বা হামলাকারীদের বিষয়ে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, চম্পা চাকমা নামে নয় বছরের শিশুকে ধর্ষন ও খুনের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিচার ও শাস্তি প্রদানের দাবি জানান। এছাড়া ১০ এপ্রিল রামগড়ের পাতাছড়া এলাকায় মো. জসিম নামের এক দুবৃত্ত কর্তৃক এক জুম্ম গৃহবধূকে ধর্ষণ প্রচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং গ্রেপ্তারকৃত দোষী মো. জসিমের শাস্তির দাবি জানান।

এছাড়া বক্তারা সমাবেশ থেকে অভিযোগ করে বলেন, মাটিরাঙ্গার বড়নাল ইউনিয়নের প্রাণকুমার পাড়া থেকে গত ২ ও ৫ এপ্রিল উপর্যুপরি সেটলার হামলার ২৭ পাহাড়ি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং বর্তমানে আশ্রয়হীন অবস্থায় অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। যারা তাদেরকে হামলা ও উচ্ছেদ করেছে হামলাকারী তাদের
 মধ্যে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জড়িত  এবং বড়নাল ও আমতলি ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন মেম্বার এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়। এ হামলার পর গত ৭ এপ্রিল বিজিবি সদস্যদের সামনে এক সেটলার বাঙালি (বিএনপির সাথে জড়িত) হুমকি দেয় যে, এলাকা ছেড়ে চলে না গেলে সবাইকে জবাই করা হবে।

 বক্তারা সমাবেশ থেকে প্রাণকুমার পাড়ায় পাহাড়ি পরিবারকে উচ্ছেদে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।