বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৪

কাপ্তাইয়ে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে এক পাহাড়ি যুবক আটক

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ৮ অক্টোবর ২০১৪, বুধবার
রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে অং সিং মং মারমা (১৭) নামের এক পাহাড়ি যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে। ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের কারনে মঙ্গলবার সারাদিন কাপ্তাইয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে মুসলমানরা।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০১৪) সকালে ইসলাম ধর্ম, পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননা করে দুইটি ছবি পোষ্ট করা হয় অংসিং মং এর ফেসবুক আইডি থেকে। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ‘পবিত্র কোরআন শরীফ’ অবমাননার অভিযোগে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে কাপ্তাই এলাকার মুসলমানরা। সেখানে কয়েকশ মুসলমান মিছিল সমাবেশ করে। তারা ইসলাম ধর্ম ও পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ এনে অংসিং মং কে গ্রেফতারের দাবী জানায় এবং কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ করে।

তাক্ষনিকভাবে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো: মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার আমেনা বেগমসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দ্রুত কাপ্তাই উপজেলায় যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য বিক্ষোভকারী মুসলমান ও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন। পরে স্থানীয় মারমা সমাজের নেতৃবৃন্দকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার একঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত অংসিং মং মারমাকে হাজির করার নির্দেশ দেন অন্যথায় গ্রেফতার অভিযান পরিচালনার হুমকী দিলে একঘন্টা পর রাতেই মারমা নেতৃবৃন্দ অভিযুক্তকে হাজির করলে জেলা প্রশাসক তাকে তার গাড়ীতে করে রাঙামাটি নিয়ে আসেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আটককৃত অংসিং মং কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়ি এলাকার বাসিন্দা ও নটরডেম কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মঙ্গলবার রাতে তাকে কাপ্তাই থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে বড়ইছড়ি পাড়ার জনৈক চাইলাপ্রু মারমার পুত্র।

তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় কাপ্তাই থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-০২/০৭-১০-২০১৪।

গ্রেফতারকৃত অংসিং মং মারমা পুলিশকে জানিয়েছেন, সে ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন নামে চারটি আইডি পরিচালনা করলেও সম্প্রতি তার একটি আইডি হ্যাক হয়। সেই আইডি থেকেই ওই অবমাননাকর ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে বলে দাবি করে সে। যদিও বিকেলের পর থেকেই তার ওই আইডিতে আর ছবিগুলো দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।


রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো: মোস্তফা কামাল আরো জানিয়েছেন,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বিক্ষুদ্ধ মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন আইসিটি বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখবেন আসলেই কি হয়েছে। কোন ধরণের উস্কানিতে পা না দেয়ার জন্য তিনি সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, সে যদি সত্যিই দোষী হয়, প্রচলিত আইনেই শাস্তি হবে আর নির্দোষ প্রমাণিত হলে মুক্তি পাবে।
-------------