শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৩

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১৫ নভেম্বর ২০১৩, শুক্রবার

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশে বাধাদানের অভিযোগে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় ১৫টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহষ্পতিবার দুপুরে বিভিন্ন পর্যায়ে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে । মামলারগুলোর মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর  থানায় ৫টি, দীঘিনালা থানায় ৪টি, গুইমারা থানায় ২টি, পানছড়ি থানায় ১টি, মহালছড়ি থানায় ১টি, মাটিরাংগা থানায় ১টি, মানিকছড়ি থানায় ১টি ও লক্ষ্মীছড়ি-১টি রয়েছে বলে জানা গেছে। অধিকাংশ জিআর মামলায় সরকারী কাজের বাধাদান, ব্রীজের পাটাতন উপড়িয়ে ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভয়ভীতি দেখানো, পুলিশের উপর হামলা ইত্যাদি অপরাধে এসব মামলা রুজু করা হয় । তবে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এ মামলা দায়েরের ঘটনাকে ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে এটা সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণ এবং গণতন্ত্রের জন্য চরম হুমকি বলে মন্তব্য করেছে।

জানা যায়, গত ৯ ও ১০ নভেম্বর প্রশাসনের অনুমতি চেয়ে ইউপিডিএফ সমর্থিত বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) প্রতিনিধি সম্মেলন করতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী আগমন উছিলায় প্রশাসন অনুমতি দিতে অপরাগতা জানায়। পরে সময় অতিবাহিত হওয়ার পর প্রশাসন সম্মেলনের অনুমতি দিলে পিসিপি তা প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী আগমনের দিন (১১নভেম্বর) সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধের দিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবরোধকারী ও নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যদের সাথে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ৩দিন পর প্রশাসনের সিদ্ধান্তে বিভিন্ন রকম মামলা দায়ের করা হয়েছে ।

খাগড়াছড়ি সদর থানায় দায়েরকৃত ৫টি মামলায় ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমা ও অংগ্য মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান ও সম্পাদক রীনা দেওয়ান সহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো দুই শতাধিক লোককে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত আইন-শৃংখলা বৈঠকের সিদ্ধান্তক্রমে ঘটনার জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে ।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি’র সভাপতি থুইক্যচিং মারমা ও সাধারণ সম্পাদক বিলাস চাকমা  বলেন, পূর্বনির্ধারিত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে বাধাদান, দেয়াল লিখন মুছে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা, বাঙালি জাতীয়তা আরোপ, সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে সমাজের বিভেদ সৃষ্টি, সেনা নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি, জনগণকে হয়রানি তথা সরকারের অব্যাহত ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপের প্রতিবাদে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এ সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছিল। সড়ক অবরোধ চলাকালে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই ষড়যন্তমূলকভাবে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটা শেখ হাসিনা সরকারের ফ্যাসিস্ট চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। তারা অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
-----