মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৩

বান্দরবানের ৩৩ মারমা পরিবার উচ্ছেদ-আতঙ্কে

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১৫ অক্টোবর ২০১৩, মঙ্গলবার

[ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার আজ ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত এ প্রতিবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এখানে হুবহু প্রকাশ করা হলো-সম্পাদক ]
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার শতাধিক বছরের প্রাচীন ফাক্ষ্যং পাড়ার ৩৩টি মারমা আদিবাসী পরিবার উচ্ছেদ-আতঙ্কে রয়েছে।
উপজেলা জরিপকারী (সার্ভেয়ার) পাড়ার জায়গাটি গোপনে বন্দোবস্ত নেওয়া মোহাম্মদ সমদ আলীর পক্ষে প্রতিবেদন প্রদান ও পাড়াবাসীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় তাঁরা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন বলে গতকাল রোববার জানিয়েছেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ফাক্ষ্যং পাড়া উচ্ছেদের হুমকির ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা দ্রুত জানানোর জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন থেকে কমিশনকে এখনো কোনো কিছু জানানো হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন।

ফাক্ষ্যং পাড়ার মংক্যচিং মারমা, চথোয়াই প্রু, রে অং কার্বারী (পাড়াপ্রধান) বলেছেন, তাঁরা বংশ পরম্পরায় শতাধিক বছর ধরে ফাক্ষ্যং পাড়ায় বসবাস করে আসছেন। সমদ আলী আশির দশকে গোপনে পাড়ার জায়গাটি তাঁর নামে বন্দোবস্ত করে নিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি পাড়াবাসীর কাছ থেকে ভাড়া দাবি করায় এবং ভাড়া দিতে না পারলে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়ায় বন্দোবস্তের বিষয়টি জানতে পেরেছেন।
মৌজার হেডম্যান (মৌজা প্রধান) উনিহ্লা মারমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথাগত আইনে পাড়ার জমি বন্দোবস্ত হয় না। পাড়াবাসীকে না জানিয়ে এবং হেডম্যান ও ভূমি প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে সমদ আলী ফাক্ষ্যং পাড়া জায়গাটি অবৈধভাবে নিজের নামে করে নিয়েছেন। তার বন্দোবস্ত বাতিল হওয়া দরকার।

পাড়াবাসী মংক্যচিং মারমা বলেছেন, সমদ আলীর বন্দোবস্ত বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে তাঁরা আবেদন করেছেন। ওই আবেদনের তদন্তে উপজেলা সার্ভেয়ার সমদ আলীর বন্দোবস্তে পাড়াবাসী বসবাস করছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছেন। পরে সমদ আলী পাড়াবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন।

সমদ আলী পাড়ার কিছু জায়াগা বন্দোবস্তে পড়েছে স্বীকার করে বলেছেন, পাড়াবাসীর কাছ থেকে বসবাসের ভাড়া দাবির অভিযোগ সত্য নয়। পাড়ার লোকজন তাঁর জমির বেড়া ভেঙে দেওয়ায় তিনি ১৪৪ ধারা জারি করে জায়গার স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। কাউকে হয়রানি করার জন্য মামলা করেননি।

জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলাম ফাক্ষ্যং পাড়ার ব্যাপারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশের কথা স্বীকার করে বলেছেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে বোঝাপড়া করে দেওয়ায় আপাতত সমস্যা নেই। বিস্তারিত তদন্ত করে কমিশনকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
----