শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩

তানাক্কাপাড়া সড়কের বেহাল অবস্থা!

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১৭ মে ২০১৩, শুক্রবার
মাটিরাঙ্গা: মাটিরাংগা উপজেলা সদর থেকে তানাক্কাপাড়া পর্যন্ত সড়কের দুরত্ব ৪৬ কিলোমিটার। উপজেলা সদর থেকে তানাক্কাপাড়া যেতে সময় লাগার কথা এক ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা বিশ মিনিট। কিন্তু এখন সময় লাগছে সাড়ে তিন ঘন্টা। এর কারণ ৪৬ কিলোমিটার রাস্তায় শত শত গর্ত। কোথাও কোথাও এমন গর্ত, যেখানে মাছ চাষ করা যাবে বলে ধারনা স্থানীয়রা উপহাস করে বলে।

রাস্তার এই করুন দশায় চরম ভোগান্তিতে আট ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। শান্তিতে নেই পরিবহন মালিকেরাও। বর্ষার আগে এই সড়কে সংষ্কার না হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে যোগাযোগ ব্যাবস্থা। জনদুর্ভোগের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে পারে মাটিরাংগা-তানাক্কা সড়কটি।

খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে জনবহুল এলাকা মাটিরাংগা উপজেলা। এ উপজেলার আট ইউনিয়নের প্রত্যেকটির অবস্থান মাটিরাংগা থেকে তানাক্কাপাড়া পর্যন্ত যাওয়া এই ৪৬ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই রাস্তাটি এখন এলাকাবাসীর জন্য মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কারণ ২০০৭ সালের পরে রাস্তাটিতে উল্লেখযোগ্য কোন সংষ্কার হয়নি।

২০১১-২০১২ অর্থবছরে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সাড়ে ৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ করে। কিন্তু মাত্র ২ কিলোমিটার কাজ করার পর অর্থবরাদ্ধ না পাওয়ার অজুহাতে কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। গত দু’বছরে এই সড়কে দূর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৫ জনের। আহত হয় শতাধিক যাত্রী। সময় বেশী লাগার অজুহাত দেখিয়ে পরিবহন মালিক পক্ষ তিনগুন ভাড়া আদায় করছে যাত্রীদের নিকট থেকে। তারপরও পরিবহন স্টাফদের দাবী তেলের টাকাও উঠেনা।

যাত্রীদের পকেট কেটে শান্তিতে নেই তারাও। কারণ রাস্তার করুণ এই দশার কারণে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে পরিবহন, বিকল হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। ক্ষতির কারণে সারাদিনে এ রাস্তায় চলাচল করে মাত্র ছয় থেকে আটটি বাস। রাস্তার বেহাল অবস্থায় সবচেয়ে বেশী ভোগান্তিতে ছাত্র-ছাত্রীরা। সময়মত স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যেতে পারেনা অনেকে। গুরুতর অসুস্থদের মাটিরাংগা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই রাস্তাটির সংষ্কার যদি বর্ষার আগেই করা না হয় তাহলে আসন্ন বর্ষায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন যাত্রী, চালক, ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকা বাসী।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসমাইল হোসেন রাস্তাটির বেহাল অবস্থা স্বীকার করে বলেন, বরাদ্ধ না থাকায় রাস্তা সংষ্কার সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া ১ জুলাই থেকে রাস্তাটি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে ন্যাস্ত করা হবে বিধায় এ মুহর্তে বরাদ্ধ না আসার সম্ভবনাই বেশী।

রাস্তার মালিক সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর হবে নাকি খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ হবে এ নিয়ে অভিযোগ নেই কারো। আট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের এখন দাবী একটাই ‘বর্ষার আগেই কমপক্ষে যান চলাচলের উপযোগী করা হোক রাস্তাটি’।