বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৩

তিন পাহাড়ি সংগঠন বন্দরনগরী চট্টগ্রামে লোগাঙ গণহত্যা দিবস পালন করেছে

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১০ এপ্রিল ২০১৩, বুধবার
চট্টগ্রাম: পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন আজ বুধবার চট্টগ্রাম শহীদ মিনারে সমাবেশ ও প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় সংঘটিত লোগাঙ গণহত্যা দিবস পালন করেছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন  পিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সুকৃতি চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক এচিং মারমা ও  শ্রমিক নেতা অর্পণ চাকমা প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এযাব ডজনের অধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। জাতিগতভাবে পার্বত্য জুম্ম জনগণকে নির্মূলীকরণের অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ডগুলো ঘটানো হয়েছে। প্রতিটি হামলা ও গণহত্যার পেছনে সেনা ও সেটলাররা জড়িত ছিলো। শুধু নির্মমভাবে খুন-জ্বালও পোড়াও চালিয়ে এই উগ্র জাতিবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ক্ষান্ত থাকেনি। তারা পাহাড়ি জনগণের হাজার হাজার একর বসতভিটা, চাষাবাদ ও পাহাড়ভূমি দখল করেছে। সেটলার কর্তৃক বেদলকৃত জমি পাহাড়ি জনগণ এখনো ফিরে পায়নি।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অত্যন্ত্ম পরিতাপের বিষয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাব সংঘটিত কোনো নিপীড়নেরই বিচার করা হয়নি। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। বরং নানাভাবে এখনো এথনিক ক্লিনজিং পলিসি কার্যকর রয়েছে।

সমাবেশ থেকে বক্তারা লোগাঙ গণহত্যায় যেসব সেনা কর্মকর্তা জড়িত ছিলো তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা, লোগাঙ গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাব যেসকল গণহত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে তার তার সাথে জড়িতদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো, জুম্ম জনগণের দখল করা হাজার হাজার একর জমি জুম্ম জনগণকে ফের দেয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের জন্য পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবি মেনে নেয়ার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাঙে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসের অন্যতম গণহত্যা সংঘটিত হয়। লোগাঙ গণহত্যায় কতজন নিহত হয়েছেন এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন তাদের 'জীবন আমাদের নয় বা “Life Is Not Ours” এর ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত আপডেট-২ প্রকাশনায় মন্তব্য করে, “লোগাঙে ঠিক কতজন জুম্ম নিহত হয়েছেন তার সংখ্যা কখনো জানা যাবে না কারণ গণহত্যার পরপরই সেনাবাহিনী মৃতদেহ সরিয়ে ফেলে। তবে অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শীর রিপোর্টের ভিত্তিতে এটা ছাড়া অন্য কোনো সিদ্ধান্ত্ম টানা যায় না যে, সংখ্যাটি অবশ্যই ১০০ জনের উপরে হবে এবং সম্ভবত কয়েকশত।” এভাবে বিগত সাড়ে তিন দশকে হাজার হাজার জুম্মকে খুন করা হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সামিল।