১৯৯৬ সালে সেনা সৃষ্ট
মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাস ও অপকর্মের বিরুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল গণপ্রতিরোধের ১৭ বছর
পূর্তিতে আজ ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়িতে সমাবেশ ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন এ সমাবেশ ও র্যালির
আয়োজন করে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা
১.৩০টায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরেরর স্বনির্ভরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি
ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি উমেশ চাকমা। এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো
বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সংগঠক রিকো চাকমা, হিল
উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক থুইক্যচিং মারমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি
জেলা শাখার সভাপতি নিকোলাস চাকমা প্রমুখ।।
বক্তারা বলেন,
পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে যুগ যুগ ধরে
সেনাবাহিনী নানা ধরনের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৯৫ সালে মুখোশ বাহিনী সৃষ্টির
মাধ্যমে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদ ও
প্রতিরোধের মুখে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী মুখোশ বাহিনীকে ভেঙে দিতে বাধ্য হয়েছিল।
বক্তারা আরো বলেন,
বর্তমানে মুখোশ বাহিনীর অস্তিত্ব না থাকলেও সরকার ও সেনাবাহিনীর চক্রান্ত থেমে
নেই। জাতীয় বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়ার জন্য সরকার একদিকে
সন্তু চক্রকে মদদ দিয়ে চলেছে অপরদিকে লক্ষ্মীছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক বোরকা বাহিনী
সৃষ্টি করে খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে এলাকায় ত্রাসের
রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে।
বক্তারা শাসকগোষ্ঠীর
সকল চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলার জন্য ছাত্র, যুব, নারী সমাজ ও
সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে স্বনির্ভর
থেকে একর্ যালি বের করা হয়। র্যালিটি নারাঙহিয়া রেড স্কোয়ার, উপজেলা পরিষদ হয়ে
চেঙ্গী স্কোয়ার ঘুরে আবার স্বনির্ভরে এসে শেষ হয়। র্যালিতে 'নব্য মুখোশ হুঁশিয়ার
সাবধান'; 'আমি দালাল, আমার সঙ্গ ত্যাগ করুন'; 'মুখোশ বাহিনীর মদদদাতা মেজর
মেহবুবদের কাছ থেকে সাবধান'; 'আমি বোরকা বাহিনী আমাকে ঘৃণা কর'; 'আমি মেজর মেহবুব,
আমার বিচার কর'...ইত্যাদি লেখা সম্বলিত বিভিন্ন মুখোশ ও প্রতিকৃতি প্রদর্শন করা
হয়।
এছাড়া 'উৎখাত করেছি মুখোশ, প্রতিরোধ করব দুর্বৃত্ত';
'গণশত্রুদের বাড়াবাড়ি বরদাস্ত করব না'; 'মুখোশ-বোরকা দিয়ে আন্দোলন ধ্বংস করা
যাবে না'; 'জনতা হুঁশিয়ার, সরকারের সাথে আছে পাহাড়ি রাজাকার'; 'নব্য মুখোশ বোরকা
পার্টি ভেঙে দাও'; 'মুখোশ বাহিনীর মদদদাতা মেজর মেহবুবের বিচার কর'... ইত্যাদি শ্লোনাগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করা হয়।
এর আগে সকাল ৭টায় শহীদ
অমর বিকাশ চাকমার স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্ত্বক অর্পণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের
৭ মার্চ সেনা মদদপুষ্ট মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাস ও অপকর্মের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িবাসী
এক তীব্র গণপ্রতিরোধ সৃষ্টি করে। এদিন গণপ্রতিরোধ অংশগ্রহণ করতে এসে সেনা-পুলিশের
গুলিতে অমর বিকাশ চাকমা নিহত হন এবং অনেকে আহত হন।