মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৩

লংগদুতে সন্তু গ্রুপের ব্রাশফায়ারে জেএসএস(এমএন লারমা)-এর তিন সদস্য নিহত


সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১২ মার্চ ২০১৩, মঙ্গলবার
রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার মধ্য ছড়া নামক স্থানে আজ ১২ মার্চ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সন্তু গ্রম্নপের ব্রাশফায়ারে জেএসএস(এমএন লারমা)-এর তিন সদস্য নিহত ও অপর এক সদস্য আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, রাঙামাটি জেলা শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুদীর্ঘ চাকমা (৪০) পিতা-প্রভাত কিশোর চাকমা, জীবন চাকমা (৩৫) পিতা- সুরেন্দ্র চাকমা ও গুনেন্দু চাকমা। আহত জেএসএস সদস্যের নাম আলোময় চাকমা।

জানা যায়, সুদীর্ঘ চাকমা ও তার অপর সঙ্গীরা দজর পাড়া থেকে করল্যাছড়িতে সাংগঠনিক কাজে যাচ্ছিলেন। যাবার পথে মধ্য ছড়া নামক স্থানে পৌঁছলে বিনয় কৃষ্ণ চাকমা ওরফে রিনিউ(৪০) ও দর্শন চাকমার নেতৃত্বে আগে থেকে ওঁ পেতে থাকা সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের উপর অতর্কিতে উপর্যুপরি ব্রাশ ফায়ার করে। এতে ঘটনাস্থলেই সুদীর্ঘ চাকমা, জীবন চাকমা ও গুনেন্দু চাকমা নিহত এবং আলোময় চাকমা আহত হন।

ইউনাইটেড পিপল্‌স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা এক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তিনি অবিলম্বে হত্যাকারী সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

অপরদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সাত সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম এর সভাপতি নতুন কুমার চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুমেন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক থুইক্য চিং, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সহ:সভানেত্রী নিরূপা চাকমা, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক সুমতি চাকমা ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড সদস্য সচিব আনন্দ প্রকাশ চাকমা এক যৌথ বিবৃতিতে এ হামলাকে অত্যন্ত্ম কাপুরুষোচিত ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করার সুদূরপ্রসারি ষড়যন্ত্র বলে মন্ত্মব্য করেছেন এবং সন্তু লারমাকে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী রাজাকারের সাথেও তুলনা করেছেন।

বিবৃতিতে সাত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘আশি দশকের প্রথমার্ধে জনসংহতি সমিতিতে ভাঙ্গন, ’৮২ সালে এমএন লারমার মৃত্যু সহ বহু ঘটনার পেছনে ছিল শাসকচক্রের সুদূরপ্রসারি নীল নক্সা। তকালীন ফৌজি শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও চট্টগ্রামের তকালীন জিওসি মেজর জেনারেল মঞ্জুর পরিকল্পনা মাফিক গোপন বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সন্তু লারমাকে মুক্তি দিয়েছিলেন। পরিণতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের ভাগ্যে নেমে এসেছিল চরম দুর্ভোগ। পার্বত্যচুক্তির পরে দ্বিতীয় বারের মত জনসংহতি সমিতির ভাঙ্গন ও চলমান রক্তক্ষয়ী ভ্রাতৃঘাতের পেছনেও শাসকচক্রের এজেন্ট হিসেবে সন্তু লারমার প্রতি পাহাড়ি জনগণের সন্দেহ দিন দিনই ঘণীভূত ও প্রমাণিত হচ্ছে। আজকের লংগুদুতে কাপুরুষোচিত হামলায় পার্বত্যবাসী তথা গোটা দেশের জনগণের নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের হোতা তথা পাহাড়ি রাজাকার-আল বদরের মুখোশ আবারও উন্মোচিত হল।'

এ ঘটনার প্রতিবাদে জেএসএস(এমএন লারমা) খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
---------------