শনিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৩

মাষ্টারদা সূর্যসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চবিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আলোচনা সভা


সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১২ জানুয়ারি ২০১৩, শনিবার
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আজ ১২ জানুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ৩য় তলা হলরুমে বিপ্লবী মাষ্টার দা সূর্যসেনের মৃত্যুদিবস উপলক্ষে তার জীবন ও কর্ম নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেআলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সিমন চাকমাসভায় আলোচনা করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের এমএম পারভেজ লেনিন, পিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সুকৃতি চাকমা, প্রগতির পরিব্রাজক দল(প্রপদ) এর জাহিদ রোকন, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম এলাকার সংগঠক মিঠুন চাকমাসভা পরিচালনা করেন জুপিটার চাকমা

আলোচনা সভায় আলোচকগণ চট্টগ্রাম এলাকার গৌরব সমগ্র ভারতবর্ষের দৃষ্টান্তস্থানীয় বিপ্লবী মাষ্টার দা সূর্যসেনের জীবন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদানকে স্মরণ করা এখনো প্রসঙ্গিক এবং শিনীয় বলে মত প্রদান করেন

সূর্যসেন এবং তাঁর ৭৩ সহযোদ্ধা যেভাবে দেশের জন্য, এবং জনগণের জন্য, পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তা বর্তমানে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এখনো অনুপ্রেরণাদায়ক বলে তারা বলেনবক্তারা বলেন, বর্তমান লড়াই সংগ্রামের দিক থেকে তুলনা করলে কাজকর্মের পদ্ধতিগত এবং কৌশলগত নানা সীমাবদ্ধতা সূর্যসেনদের লড়াইয়ের মধ্যে থাকলেও তাদের বিপ্লবী চেতনা, উৎসর্গীকৃত মনপ্রাণ এবং মুক্তির আকাঙ্খা প্রত্যেক মুক্তিকামী সংগ্রামীর জন্য অবশ্যই এখনো অনুসরণীয়
তারা "করবো অথবা মরবো" এই পণ নিয়েই ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন
বর্তমান প্রোপটে তাদের লড়াইকে "সন্ত্রাসবাদ বা বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ" হিসেবে আখ্যা দেয়া যেতে পারে কিন্তু তারা যে সত্যিকাভাবেই তৎকালীন ভারতবর্ষ তথা মাতৃভূমির জন্য জীবন দিয়েছেন সেখান থেকেই আজ সবার শিক্ষা নেয়া প্রয়োজন

উল্লেখ্য ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি বা আইআরএ চট্টগ্রাম শাখার সর্বাধিনায়ক হিসেবে বিপ্লবী মাষ্টারদা সূর্যসেন ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা করেনসশস্ত্র লড়াইয়ের প্রথমদিনে তাঁর বাহিনী চট্টগ্রামের পুলিশ দপ্তর দখল করে অস্ত্রাগার তাদের হেফাজতে নেয়, একইসাথে তারা টেলিগ্রাফ অফিস ধ্বংস করে দেয় এবং রেললাইন উপড়ে ফেলে দেয় যাতে সরকারী বাহিনীর পাল্টা আক্রমণকে ঠেকানো যায়এরপরে তারা চট্টগ্রাম সেনা ব্যারাকে হামলা চালায়এভাবে সূর্যসেনের নেতৃত্বে ৭৩ জন বিপ্লবী বহুগুণ শক্তিসম্পন্ন ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দেয় এবং লিফলেটের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত ঘোষণা করে এবং স্বাধীন ভারতের পতাকা উড়িয়ে দেয়তারা চট্টগ্রামের যুবসমাজের প্রতি বিপ্লবী বাহিনীতে ভর্তি হবার আহ্বান প্রচার করেনজানা যায় সূর্যসেনের বিপ্লবী বাহিনী তিনদিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম দখলে রেখেছিলএরপরে তাদের বাহিনী চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেয়
১৯৩০ থেকে দীর্ঘ ৪ বছর সূর্যসেন ও তার সহযোদ্ধারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়ে যায়পরে সূর্যসেন এবং তার সাথী ব্রজেন সেন ১৯৩৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী ইংরেজ বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি সূর্যসেন আরেকজন বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদারকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।#
.........