সিএইচটি নিউজ বাংলা, ২২ সেপ্টেম্বর
২০১২, শনিবার
আজ ২২ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেল সোয়া চারটায় দীঘিনালায়
ইউপিডিএফ'এর দুই শহীদ বৈথাং খিয়াং ও রমেশ চাকমার প্রতি সর্বোচ্চ দলীয় সম্মান
প্রদর্শন এবং শপথগ্রহণের মধ্য দিয়ে অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
দুপুর ২:১১ মিনিটে দীঘিনালা বনবিহার
মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউপিডিএফ-এর দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা
শুরু হয়। ইউপিডিএফ কর্মীদের একটি চৌকষ স্বেচ্ছাসেবক দল আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনে
সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। পতাকা অর্ধনমিত করার পরে পরেই স্বেচ্ছাসেবকদের
অন্য একটি টিম মঞ্চে বয়ে আনে শবদেহ। এতে ইউপিডিএফ'এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সম্মান জানান, স্বেচ্ছাসেবক টিম হ্যান্ডস্যালুট প্রদান করে
শহীদদ্বয়ের প্রতি সম্মান জানায়। এ সময় রেকর্ডপ্লেয়ারে বেজে উঠে
বিউগলের করুণ সুর দি লাস্ট পোস্ট। এর পরে পরে শহীদ পরিবারবর্গ, ইউপিডিএফভুক্ত
সংগঠনসমূহ গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম-পিসিপি-এইচডব্লিউএফ, সাজেক নারী সমাজ, সাজেক ভূমি
রক্ষা কমিটি, প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি উপজেলা
ভাইস-চেয়ারম্যান, বোয়ালখালি মৌজা হেডম্যান ত্রিদিব পোমাং, ২নং বোয়ালখালি ইউপি
চেয়ারম্যান কালাধন চাকমা, সমাজকর্মী-ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, এলাকাবাসী ও স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের
পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণ সম্পন্ন হলে
উপস্থিত সর্বস্তরের জনতা শহীদদ্বয়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে দু'মিনিট নিরবতা পালন করেন। এর পরেই শুরু হয় সমাবেশ। সমাবেশে
ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত খীসার শোকবার্তা পড়ে শোনানো হয়। ইউপিডএফ দীঘিনালা-বাঘাইছড়ি
সাংগঠনিক জেলা ইউনিট-এর সভাপতি শান্তিদেব চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন
ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় সদস্য প্রদীপন খীসা, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান সুপ্রিয় চাকমা,
জেএএস (লারমা) দীঘিনালা শাখার সভাপতি যুগল চাকমা, ডিওয়াইএফ সভাপতি নতুন কুমার
চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি কণিকা চাকমা, পিসিপি'র কেন্দ্রীয় সাধারণ
সম্পাদক থুই ক্য চিং। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য
রাখেন ইউপিডিএফ দীঘিনালা উপজেলা ইউনিট-এর
সংগঠক মিল্টন চাকমা। সমাবেশ পরিচালনা করেন ইউপিডিএফ নেতা অংগ্য মারমা। পার্টি
সভাপতির শোকবার্তা পড়ে শোনান এইচডব্লিউএফ নেত্রী মাদ্রি চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা বৈথাং খিয়াং ও রমেশ
চাকমাকে ভাড়াটে গুণ্ডা লেলিয়ে দিয়ে গুপ্ত
হত্যার জন্য সন্তু লারমাকে দায়ি
করেন। বক্তাগণ সন্তু লারমাকে সরকারের পোষ্যপুত্র, দালাল, জাতীয় বেঈমান বলে
আখ্যায়িত করেন। উল্লেখ্য, গেল বুধবার দীঘিনালায় আনসার কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের
প্রতিবাদে সমাবেশ সংগঠিত করতে গিয়ে ইউপিডিএফ কর্মী বৈথাং খিয়াং ও রমেশ চাকমা সন্তু চক্রের ভাড়াটে গুণ্ডাদের গুপ্ত হত্যার
শিকার হন। সবচে' বেদনাদায়ক বিষয় হল
তারা সেদিন ছিলেন অভুক্ত, রাতের খাবারও খেতে পান নি। সারাদিন সাংগঠনিক কাজে ঘুরে
ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত অবস্থায় গ্রামে ফিরে ওঁৎ পেতে থাকা সন্তুচক্রের ভাড়াটে
গুণ্ডাদের হামলার শিকার হয়েছিলেন।
সমাবেশে উপস্থিত ছাত্র-যুব-জনতা
সন্তু লারমার ধ্বংসাত্মক জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপের প্রতি ধিক্কার দেন,
তীব্র নিন্দা জানান। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সন্তু লারমাই পার্বত্য চট্টগ্রামে
সেনা-সেটলার নির্যাতন, নারী ধর্ষণের মত প্রতিবাদে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।