রবিবার, ১২ জুন, ২০১১

খাগড়াছড়িতে কল্পনা চাকমা অপহরণের ১৫তম বার্ষিকী পালিত : তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১২ জুন ২০১১

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্যোগে খাগড়াছড়িতে কল্পনা চাকমা অপহরণের ১৫তম বার্ষিকী পালিত হয়েছে আজ ১২ জুন, রবিবার বিকাল ৪টায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের স্বনির্ভরস্থ ঠিকাদার সমিতি ভবনে এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এতে সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কণিকা দেওয়ান এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রীনা দেওয়ান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আপ্রুসি মারমা ও কলেজ শাখার সভাপতি বিপুল চাকমা

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, কল্পনা অপহরণের পর দেশে বিভিন্ন সরকার রদ-বদল হলেও কোন সরকারই কল্পনা অপহরণের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের উদ্যোগ নেয়নি এবং চিহ্নিত অপহরণকারী লে: ফেরদৌস সহ তার সহযোগীদের শাস্তির ব্যবস্থা করেনি বর্তমান সরকারও তার কোন ব্যতিক্রম নয়

পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ও সেটলার কর্তৃক নারী নির্যাতনের ঘটনা নতুন নয় উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের মতো সামরিকায়িত অঞ্চলে নারীরাই সবচেয়ে বেশী নির্যাতনের শিকার হয় কল্পনা চাকমা অপহরণ তাই কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না এটা হলো পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর ওপর উগ্র বাঙালী জাতীয়তাবাদী শাসক গোষ্ঠির আধিপত্য বজায় রাখার নীতিরই নগ্ন ও বর্বরতম বহিঃপ্রকাশ

কল্পনা চাকমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নারীদের প্রতিবাদে ও প্রতিরোধের আন্দোলনকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতনসহ জাতিসত্তাগুলোর উপর সকল ধরনের নির্যাতন কিছুতেই সহ্য করা হবে না৷ তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে যেখানে নারী নির্যাতন সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। এজন্য সকল নারী সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে

বক্তারা অবিলম্বে কল্পনা চাকমা অপহরণের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ও চিহ্নিত অপহরণকারী লে: ফেরদৌস সহ তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ও সেটলার কর্তৃক নারী নির্যাতন বন্ধ করা ও নারী নির্যাতনের সকল ঘটনার বিচার করে দোষীদের শাস্তি প্রদান, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারপূর্বক তথাকথিত অপারেশন উত্তরণ বাতিল করা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুনর্বাসিত সেটলারদের সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন ও তাদেরকে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল ও বেদখলকৃত ভুমি ফিরিয়ে দিয়ে সংবিধানে প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি দান ও জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান

উল্লেখ্য যে, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৭ঘন্টা আগে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানাধীন কজইছড়ি আর্মি ক্যাম্পের তত্‍কালীন কমান্ডার লে: ফেরদৌস কর্তৃক কল্পনা চাকমা নিজ বাড়ি থেকে অপহৃত হন