সিএইচটি নিউজ বাংলা, ১০ জুন ২০১১
পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের জন্য জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার নিকট দাবি জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, হেড্যামন ও কার্বারীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আজ ১০ জুন সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে ৭৫ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, ৩৩ জন হেডম্যান, ১৩১ জন কার্বারী ও ৬৪ জন শিক্ষক সহ ৮৯২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা, মহালছড়ি উপজজেলা চেয়ারম্যান সোনারতন চাকমা, দিঘীনালা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রিয় চাকমা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শতরূপা চাকমা, লীছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিলন চাকমা, মহালছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান থুইহাঅং মারমা, বাঘাইছড়ি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাগরিকা চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা হেডম্যান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশপ্রীতি চাকমা, মহালছড়ি উপজেলা হেডম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি সুধাংশু বিকাশ খীসা, খাগড়াছড়ি জেলা কার্বারী এসোসিয়েশনের সভাপতি রণিক ত্রিপুরা, রামগড় উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী, মাটিরাঙ্গা উপজেলার ১৯৯নং বাল্যাছড়ি মৌজার হেডম্যান ত্রিদ্বীপ নারায়ণ ত্রিপুরাসহ আরো অনেকে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি গত ২১ মে ২০১১ রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের মিদিঙাছড়ি গ্রামে সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় নেতা অনিমেষ চাকমাসহ চার ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনাসহ ইতিপূর্বে সংঘটিত অনুরূপ সহিংস ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ভ্রাতৃঘাতি সংঘর্ষে গত ১৩ বছরে ইউপিডিএফ ও জেএসএস-এর শত শত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পথে বসেছেন, বহু নারী স্বামী হারিয়ে বিধবা হয়েছেন ও অনেকে তাদের বাকী জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতি ও জনগণের স্বার্থের জন্য হানিকর এই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত অবিলম্বে বন্ধ হোক৷ আমরা পাহাড়ে আর কোন রক্তপাত দেখতে চাই না। আমরা চাই আর যাতে কোন মায়ের কোল খালি না হয়।
তারা আরো বলেন, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের জন্য ইতিপূর্বে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাজী হয়েছে এবং পত্রিকায় বিবৃতির মাধ্যমে চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার ও জনসংহতি সমিতিকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার কাছে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পূর্ণ শক্তি ও মনোযোগ নিয়োজিত করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।