- নিরন চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা। জনসংহতি সমিতির আত্মসমর্পনের পর ১৯৯৮ সালের ৪ঠা এপ্রিল পানছড়িতে প্রদীপ লাল ও কুসুম প্রিয় চাকমাকে হত্যার মাধ্যমে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের সূচনা। এরপর গত ১৩ বছরে ইউপিডিএফ ও জেএসএস এর কয়েক শত নেতাকর্মী ও সাধারণ নিরীহ লোকজন প্রাণ হারিয়েছেন। শুরু থেকেই ইউপিডিএফ হানাহানি বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য জেএসএস-এর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। ইউপিডিএফ মনে করে আন্দোলনের নীতি কৌশল সম্পর্কে দু'টি দলের মধ্যে, এমনকি একটি দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অংশের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে এবং থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আন্দোলনকারী শক্তিগুলোর মধ্যে এই ধরনের মত পার্থক্য মীমাংসার পদ্ধতি হলো গণতান্ত্রিক অর্থাত্ আলাপ আলোচনা। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা যুদ্ধের মাধ্যমে এই ধরনের মত পার্থক্য নিরসনের চেষ্টা কখনোই কাম্য হতে পারে না। কারণ এতে শত্রু পক্ষ তাদের দ্বন্দ্বের পূর্ণতম সুযোগ নিয়ে থাকে।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জেএসএস শুরু থেকেই আলোচনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। জেএসএস অর্থাত্ সন্তু লারমা সশস্ত্রভাবে ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ইউপিডিএফ-কে নির্মুলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইউপিডিএফ-কে নির্মূলের প্রকাশ্য ঘোষণাও তিনি দিয়েছেন৷ কিন্তু দেখা গেছে, তিনি যত বেশী শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ইউপিডিএফ-কে নির্মূলের চেষ্টা করেছেন, তত বেশী ইউপিডিএফ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এক সময় ইউপিডিএফ-অবস্থান মাত্র দু'একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু আজ সে পার্বত্য চট্টগ্রামে সবচেয়ে শক্তিশালী, সুসংগঠিত ও সুনিয়ন্ত্রিত দল হিসেবে গড়ে উঠেছে।
সংঘাত চলার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে সংঘাত নিরসনের উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউএনপিও (আনরিপ্রেজেন্টেড ন্যাশনস এন্ড পিপলস অর্গানাইজেশন) প্রথম দুই পার্টির মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত নিরসনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু জেএসএস অত্যন্ত সুকৌশলে তার উদ্যোগকে ব্যর্থ করে দেয়। রাজা দেবাশীষ রায়ও এক সময় সমঝোতার উদ্যোগ নেন। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। সন্তু লারমা ভারতের কলকাতা থাকাকালে ২০০০ সালে খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও জেএসএস-এর মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু সন্তু লারমা দেশে ফিরে সেই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন। পরে জেএসএস দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার প্রাক্কালে তাদের কংগ্রেসের আগে ২০০৬ সালের জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত তিন দফা বৈঠকে দুই পার্টি একটি সমঝোতায় উপনীত হয়। এই বৈঠকের দিন-তারিখ, স্থান, বৈঠকের ধরণ, মধ্যস্থতাকারী, এমনকি ইউপিডিএফ-এর পক্ষে কে প্রতিনিধিত্ব করবেন তাও জেএসএস ঠিক করেছিল। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ইউপিডিএফ নেতৃবৃন্দ কোন উচ্চবাচ্য না করে সব শর্ত মেনে নিয়ে ওই বৈঠকে বসেছিল। কিন্তু তবুও দুর্ভাগ্য, বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ হওয়ার পরও, তৃতীয় বৈঠক থেকে উঠে যাওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় জেএসএস ওই সমঝোতা লঙ্ঘন করে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন জায়গায় ইউপিডিএফ-এর ওপর হামলা শুরু করে। এতে বেশ কয়েকজন ইউপিডিএফ সদস্য মারা যান। ইউপিডিএফ মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে জেএসএস -এর কাছে এর বিরুদ্ধে লিখিত প্রতিবাদ জানায় ও আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানায়। কিন্তু জেএসএস কোন উত্তর না দিয়ে হামলা অব্যাহত রাখে।
চাকমা ভাষায় একটা প্রবাদ আছে, "যে কুগুরোর লেজ বেঙা চুমোত ভোরেলয়্য উজু ন-অয়" (কুকুরের বাঁকা লেজ কখনো সোজা হয় না)। এই প্রবাদের বাংলা ইকুইভ্যালেন্ট হতে পারে "কয়লা ধূলেও না যায় ময়লা।" এত কিছু করার পরও ইউপিডিএফ জেএসএস-এর চরিত্র পরিবর্তন করতে পারেনি। উক্ত সমঝোতার সুযোগ নিয়ে সন্তু গ্রুপ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা বারুদ সংগ্রহ করে ও নতুন কর্মী ভর্তি করিয়ে তাদের সামরিক ট্রেনিং দেয়। এভাবে নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করার পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সন্তু গ্রুপ আবার ইউপিডিএফ-এর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের সেই হামলা আজ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ ২১ মে সুবলঙে তারা ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় নেতা অনিমেষ চাকমা ও অন্য তিন সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে। কি নির্মম পরিহাস, এই অনিমেষ চাকমাই বাঘাইছড়িতে সন্তু গ্রুপের সাথে সমঝোতা প্রস্তাবে রাজী হয়ে চুক্তিতে উপনীত হতে সাহায্য করেছিল। আজ তাকেই তারা নির্মমভাবে খুন করলো।
ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত অত্যন্ত বেদনাদায়ক। বোধশক্তি সম্পন্ন কেউ চায় না এই সংঘাত চলতে থাকুক। বলা যায় ৯৯.৯৯% জুম্ম ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের পক্ষে। কিন্তু তারপরও সংঘাত ও রক্তক্ষয় চলছে। মাত্র গুটিকয় ব্যক্তির কাছে পুরো জনগণ আজ জিম্মি। কিন্তু কেন? এই জিম্মিকারীরা কি ৯৯.৯৯ শতাংশের চাইতে বেশী শক্তিশালী? মোটেই নয়। তাহলে কেন সংঘাত বন্ধ হচ্ছে না? বন্ধ না হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণের মধ্যে একটি হলো যারা সংঘাত বন্ধের পক্ষে যারা দুই পার্টির মধ্যে ঐক্যের পক্ষে তারা সংখ্যায় বেশী হলেও অসংগঠিত ও উদ্যোগহীন। কেবল সংঘাত চাই না, ঐক্য চাই বললেই সংঘাত বন্ধ হয় না ও ঐক্য আসে না। এর জন্য সংগ্রাম ও প্রচেষ্টা দরকার, যা অনুপস্থিত। ছাত্র সমাজসহ জনগণের একটি অংশ সংঘাত হানাহানিতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে এখন নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলা যায়, নিজেকে গুটিয়ে রাখাটা সামগ্রিক কোন সমাধান নয়, বরং তা যুদ্ধবাজদের হাতকেই শক্তিশালী করে। এছাড়া, আর একটি অংশ আছেন যারা সংঘাতের বিপক্ষে ঠিকই, কিন্তু ইউপিডিএফ - জেএসএস উভয় পক্ষ থেকে তারা নিজেদের সম-দূরত্বে সরিয়ে রাখেন। এদের সংখ্যাটা কিন্তু নেহায়েত কম নয়। এদের এই অবস্থানও তাদেরকেই লাভবান করে যারা ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রাখতে চায়। এছাড়া আরো এক ধরনের লোক আছেন যারা সংঘাতের জন্য দুই পক্ষকেই সমভাবে দায়ি করে তাদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়েন। এদের ঐক্যের আকাঙ্খা ও প্রতিবাদী চেতনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলা আবশ্যক যে, ইউপিডিএফ ও জেএসএস-এর মধ্যেকার দ্বন্দ্বের উত্পত্তির কারণ সম্পর্কে ভালোভাবে অনুসন্ধান না করে আন্দাজে সরলীকৃত সিদ্ধান্তে ঝাঁপ দেয়া ঠিক নয়। দ্বন্দ্ব মানেই হলো দুটো পক্ষ -- যাদের দোষ-গুণ বিচারককে নির্ণয় করতে হয়। কোন বিচারককে কি একই মামলায় বাদী বিবাদী উভয়পকে সঠিক বা বেঠিক বলে রায় দিতে দেখা গেছে? ধরা যাক, এক জুয়ারী প্রত্যেকদিন জুয়া খেলায় সর্বস্ব হারিয়ে মদে মাতাল হয়ে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে অকারণে বাড়ির স্ত্রী পুত্রকে গালমন্দ-মারধর ও বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙতে থাকে। একদিন এই অপমান ও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী তার স্বামীর আচরণের প্রতিবাদ জানায়। এতে ওই জুয়ারী স্বামী আরো বেশী ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাতে থাকে। মায়ের এমন অবস্থা দেখে তার ছেলেরাও -- যারা ইতিমধ্যে অনেকটা বড় হয়েছে -- মাকে রক্ষার জন্য বাবার অন্যায়ের প্রতিবাদ করে। এক্ষেত্রে কি স্বামী স্ত্রী উভয়কে দোষী সাব্যস্ত করা ঠিক হবে? হ্যাঁ, মধ্যযুগীয় চিন্তায় আচ্ছন্ন মৃত বিন লাদেন ও তার অনুসারীরা হয়তো স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে তার শিরশ্চেদ করতে পারে এই অচল অপাঙতেয় যুক্তিতে যে, "স্বামীর পায়ের নীচে স্ত্রীর বেহেস্ত।" অন্যদিকে, যারা আধুনিক চিন্তা চেতনা সম্পন্ন তারা স্ত্রীকে নয় স্বামীকেই দোষী সাব্যস্ত করবে। তবে এ যুগে এমন লোকও হয়তো পাওয়া যাবে যারা স্বামী স্ত্রী উভয়ের মধ্যে সমভাবে দোষ বণ্টন করতে চাইবে।
জেএসএস-এর ভূমিকাও কি অনেকটা ওই জুয়ারীর মতো নয়? সরকারের সাথে চুক্তি করে সর্বস্ব হারিয়ে তারা এখন নিরীহ জনগণ ও ইউপিডিএফ-এর ওপর অকারণে চড়াও হচ্ছে। তারপরও ইউপিডিএফ বছরের পর বছর ঐক্যের প্রস্তাব দিয়ে আসছে, এমনকি চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে, আর অন্যদিকে জেএসএস তা প্রত্যাখ্যান করছে ও সংঘাত জিইয়ে রাখছে -- এ ক্ষেত্রে কিভাবে উভয় পক্ষ সমভাবে দোষী হবে? সংঘাত বন্ধের প্রশ্নে ইউপিডিএফ ও জেএসএস-এর অবস্থানের পার্থক্য দিন ও রাতের মতো। কিন্তু তা সত্বেও যারা এই পার্থক্য দেখতে পায় না তাদের উদ্দেশ্যে আমার কোন কথাই কাজে আসবে বলে মনে হয় না। বরং তা জন্মান্ধকে হাতি চিনিয়ে দেয়ার মতোই ব্যাপার হতে পারে। তারপরও এটা বলা দরকার, প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির উচিত সত্যকে সত্য বলা ও গ্রহণ করা, মিথ্যাকে মিথ্যা বলা ও বর্জন করা, ন্যায়কে ন্যায় বলা ও তার পক্ষে সংগ্রাম করা, অন্যায়কে অন্যায় বলা ও তার বিরোধীতা করা; ভালোকে ভালো বলা এবং গ্রহণ করা, মন্দকে মন্দ বলা ও ত্যাগ করা।
যখন দুই বন্ধুর মধ্যে ঝগড়া-হাতাহাতি হয়, তখন তাদের অন্য বন্ধুদের দায়িত্ব হলো তাদের বিবাদ মিটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা। যে পক্ষ বিবাদ বন্ধ করতে চায় না এবং তার প্রতিপক্ষকে মারতে থাকে, তখন তাকে জোর করে বসিয়ে দিয়ে মারামারি বন্ধ করে দিতে হয়। ঠিক তেমনি যখন দুই পার্টির মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত চলে তখন সমাজের বিভিন্ন সচেতন অংশগুলোকে তা বন্ধের জন্য তত্পর হতে হয়। এটা প্রত্যেকের ন্যুনতম সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। সুতরাং চলমান সংঘাত বন্ধের জন্য প্রত্যেক সচেতন পাহাড়ির উচিত একদিকে যারা সংঘাত বন্ধের পক্ষে যারা ঐক্যের পক্ষে তাদের সাথে নিজেকে যুক্ত করা, এক কথায় ঐক্যের পরে হাতকে শক্তিশালী করা; অন্যদিকে যারা ঐক্যের বিপক্ষে ও সংঘাত জিইয়ে রাখার পক্ষে তাদের সর্বতোভাবে বিরোধীতা করা ও কঠোরভাবে নিন্দা করা৷ এ ক্ষেত্রে আমরা চীনের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারি। বিপ্লবের আগে চীনে কমিউনিস্ট পার্টি ও কুয়োমিনটাঙ পার্টির মধ্যে গৃহযুদ্ধ চলে। অবশ্য তার আগে এই দুই দলের মধ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনও হয়েছে। চিয়াং কাইশেক ক্যুদেতার মাধ্যমে কুয়োমিনটাঙ দলের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর কমিউনিস্ট নিধন শুরু করলে ওই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। গৃহযুদ্ধ চলার সময় ১৯৩৪ সালে জাপান চীন আক্রমণ করলে চীনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যায়। কমিউনিস্ট পার্টি গৃহযুদ্ধ বন্ধ করে জাপানী আগ্রাসন ঠেকানোর জন্য কুয়োমিনটাঙের কাছে যুক্ত ফ্রন্ট গঠনের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু চিয়াংকাইশেক ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জাপানী আগ্রাসন ঠেকানোর বদলে কমিউনিস্ট নিধন অব্যাহত রাখে। এ অবস্থায় লক্ষ লক্ষ ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ সাধারণ চীনা জনগণ গৃহযুদ্ধ বন্ধ করে জাপানী আগ্রাসন প্রতিরোধের দাবিতে দেশব্যাপী মিছিল-বিক্ষোভের বন্যা বয়ে দেয়। এমনকি তারা কুয়োমিনটাঙের অফিসে হামলা চালায় এবং কুয়োমিনটাঙ দলের নেতাকর্মীদের লাঞ্ছিত, অপমানিত ও শায়েস্তা করে। জনগণের মধ্যে ঐক্যের এই তীব্র আকাঙ্খা ও তার জন্য কঠোর সংগ্রাম চিয়াং কাইশেক-এর সৈন্যবাহিনীর মধ্যেও প্রভাব ফেলে। এক পর্যায়ে তিন জেনারেল চিয়াং কাইশেকের বিরুদ্ধে ক্যুদেতা সংঘটিত করে এবং তাকে কমিউনিস্টদের সাথে যুক্ত ফ্রন্ট গঠনে বাধ্য করে। এভাবে চীনা জনগণ গৃহযুদ্ধ বন্ধ করে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে জাপানী আগ্রাসন মোকাবিলা করে ১৯৪৯ সালে মুক্ত হয়।
কাজেই দেখা যায়, ঐক্য সহজে ও এমনি এমনি প্রতিষ্ঠিত হয় না। ঐক্যের জন্য যথেষ্ট সংগ্রাম করতে হয়, সমাজের মধ্যে প্রচেষ্টা থাকতে হয়। বর্তমান সময়ে প্রত্যেক সচেতন পাহাড়ির জরুরী কর্তব্য হলো ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের জন্য সংগ্রাম করা। এই সংগ্রামের একটি দিক হলো সংঘাত বন্ধের জন্য সন্তু লারমা ও তার দলের নেতাকর্মীদের ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা। অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো একইসাথে ঐক্যের পরে শক্তিকে সংঘবদ্ধ করা। আজ যদি ঐক্যের পক্ষের শক্তিগুলো একত্রিত হয়ে সংঘাত বন্ধের জন্য সত্যিকার প্রচেষ্টা চালায় তাহলে দ্রুত সংঘাত বন্ধ হতে বাধ্য। গণআকাঙ্খাকে বন্দুকের নল দিয়ে চিরদিন দাবিয়ে রাখা যায় না। তিউনিশিয়া, মিশর ও আরব দুনিয়ার চলমান বিপ্লব তার জ্বাজ্জ্বল্য দৃষ্টান্ত।
------ সমাপ্ত ------