সিএইচটি নিউজ বাংলা, ২৩ জুলাই ২০১৪, বুধবার
বুদ্ধমূর্তি স্থাপনে প্রশাসনে বাধাদানের
প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাঙামাটির প্রত্যন্ত ইউনিয়ন সাজেক। এলাকাবাসীর উদ্যোগে গঙ্গারাম দোর-এর উজো বাজার এলাকায়
একটি বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করতে গেলে গতকাল মঙ্গলবার বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন থেকে বাধা
প্রদান করা হয়। এরপরই এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। মঙ্গলবার সারারাত তারা
বুদ্ধমূর্তি নির্মাণাধীন স্থানে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
আজ বুধবার
দুপুরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা উজো বাজারে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে বৈঠক করেন। এ সময়
প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুদ্দিন আহম্মদ,
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ) হাবিবুর রহমান, খাগড়াছড়ি জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
মো: সারোয়ার হোসেন, বাঘাইছড়ি থানার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী প্রমুখ।
এছাড়া এলাকাবাসীর
পক্ষ থেকে সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা, ভূমিরক্ষা কমিটির জ্ঞানেন্দু
চাকমা, সাজেক নারী সমাজের নিরুপা চাকমা, ডা: প্রদীপ চাকমা, জ্যোৎস্নারানী মেম্বার, অম্পিকা চাকমা, জেনেল কার্বারী,
নয়নরঞ্জন চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপস্থিত প্রতিনিধিবৃন্দ বুদ্ধমূর্তি স্থাপনে বাধাদান বন্ধ
করা ও উজো বাজার এলাকায় বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের নামে পাহাড়িদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র
বন্ধ করার দাবি করেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের দাবি পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র
ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বললে পাহাড়িরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপরই বিকাল ৪.৪০টা
থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ পাহাড়িরা উজো বাজারের চৌমুহনীতে রাস্তার উপর বসে পড়ে অবরোধ
শুরু করে। এরফলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা এক প্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
পরে রাত আটটার দিকে এলাকাবাসীর সাথে প্রশাসনের কর্মকর্তারা আবারো
এক বৈঠক করেন। এ সময় আগামী ১০ দিন পর্যন্ত ‘উজো বাজার এলাকায় পুলিশ ফোর্স ও ১৪৪
ধারা জারি থাকবে না’ এমন শর্তে এক সমঝোতা হয়। এসব শর্তে বুদ্ধমূর্তি নির্মাণ কাজও
স্থগিত রাখতে সম্মত হয় এলাকাবাসী। পরে এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নিলে প্রশাসনের
কর্মকর্তারা গাড়িযোগে ফিরে যান। এরপর
এলাকাবাসীও নিজ নিজ বাসায় ফেরেন।
এদিকে, সাজেক
ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমা ও সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা
চাকমা আপাতত অবরোধ প্রত্যাহার করা হলেও দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত
রাখার ঘোষণা দিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রশাসন যতক্ষণ পর্যন্ত বুদ্ধমূর্তি স্থাপনে
বাধাদান ও বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের নামে ভূমি বেদখল ও পাহাড়ি উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র
বন্ধ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত সাজেকবাসী আন্দোলন চালিয়ে যাবে। প্রশাসন যদি
জোরপূর্বক জনগণের এ আন্দোলন দমনের চেষ্টা চালায় তাহলে যেকোন উদ্ভুত পরিস্থিতির
প্রশাসনকেই সকল দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।
তারা অবিলম্বে
সাজেকবাসীর দাবি মেনে নেয়ার জন্য প্রশাসন ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।