শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

খাগড়াছড়ি আসনে ইউপিডিএফ মনোনীত প্রার্থী প্রসিত বিকাশ খীসার সমর্থনে ১০ দফার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

সিএইচটি নিউজ বাংলা, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩, শনিবার

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ২৯৮ নং খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনে ইউপিডিএফ-এর মনোনীত প্রার্থী হলেন সংগঠনের সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা। তাঁর মার্কা হাতি। তাঁর সমর্থনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয় কমিটি গত ২৫ ডিসেম্বর ১২ পৃষ্ঠার একটি নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে। উক্ত নির্বাচনী ইশতেহারে মোট ৬টি শিরোনামে ইউপিডিএফ তার নির্বাচনী ঘোষনা প্রদান করেছে। উক্ত নির্বাচনী ঘোষনার ৬ষ্ঠ শিরোনামে  জনগণের ভোটে নির্বাচনে বিজয়ী হলে ইউপিডিএফ কী করবে তা ১০টি দফায় প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে- আসন্ন নির্বাচনে ইউপিডিএফ নিম্নোক্ত বিষয়কে গুরুত্ব দেবে,

১. বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী আইন বাতিল করে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল জাতিসত্তার জাতীয়তার স্বীকৃতির দাবিতে জনমত গঠন ও আন্দোলন সংগঠিত করা। দুর্বল, সংখ্যালঘু, অনগ্রসর, পশ্চা
পদ পিছিয়ে পড়া জাতি, সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠীর স্বীকৃতি-অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভূমিকা রাখা।

২. উগ্র জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, ধর্মান্ধতার বিরোধিতার পাশাপাশি আঞ্চলিকতা ও গোত্রভিত্তিক সংকীর্ণ জাতীয়তা যাতে গড়ে না ওঠে সে ব্যাপারে সযত্ন ভূমিকা রাখা। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালি জনগণের মধ্যে বৈরিতা কাটিয়ে তুলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও সংহতি প্রতিষ্ঠা করা।

৩. প্রত্যাগত, বঞ্চিত ও আভ্যন্তরীণ শরনার্থী, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা শান্তিবাহিনী(১৯৮৫ ও ১৯৯৮) সবার যথাযথ পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ভুমিকা রাখা।

৪. ভুমি বেদখল রোধ ও বহিরাগতদের জীবিকার নিশ্চয়তাসহ সম্মানজনকভাবে তাদের আদি আবাসস্থলে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সহায়তাদান।

৫. সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং দেশ রক্ষা ও উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামের যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টি ও পদক্ষেপ
গ্রহণ করা।

৬. পাহাড়িদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ উস্কে দিয়ে তাদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করার ধ্বংসাত্মক নীতি বন্ধ করতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। পাহাড়িদের মধ্যে সামাজিক ও ধর্মীয় বিভাজন রোধকল্পে ভূমিকা রাখা। মারমা জাতিসত্তার অভ্যন্তরীণ সমস্যাকে মদদ দিয়ে সম্প্রদায় হিসেবে তাদের
বিভক্ত ও দুর্বল করে রাখার শাসকচক্রের নীলনক্সা কার্যকর হতে না দেয়া।

৭. সমাজে নেশা জাতীয় দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, অপসংস্কৃতি রোধ, সুষ্ঠু বিনোদনের ব্যবস্থা করা; নারী অধিকার নিশ্চিত করা, যুব শক্তিকে দেশগড়ার কাজে
নিযুক্ত করতে উদ্বুদ্ধ করা।

৮. বন-প্র্কৃতি, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষার্থে সাধ্যমত ভুমিকা পালন। বন্যা, ঘুর্ণিঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জনগণকে সংগঠিক করে মোকাবিলা করা।

৯. সমাজে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা্র আন্দোলন জোরদার করা এবং ক্ষমতাসীনদের সিন্ডিকেটের কবল থেকে ব্যবসা বানিজ্য, টেন্ডার পারমিট ও চাকুরি অবমুক্ত করে সবার সমান সুযোগ প্রদানে ভূমিকা রাখা।

১০. দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বহিঃহ্স্তক্ষেপের বিরোধিতা করা।


এছাড়া উক্ত দশ দফা বাদেও প্রথম কংগ্রেসে গৃহীত কর্মসূচি ও দাবিনামা অনুযায়ী ইউপিডিএফ কাজ করবে বলে উক্ত ইশতেহারে বলা হয়েছে।