সিএইচটি নিউজ বাংলা, ২২ মে ২০১৩,
বুধবার
রাঙামাটি প্রতিনিধি : অবশেষে দীর্ঘ আট বছর পর বদলী করা হলো রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার
কাউখালী উপজেলার ক্ষমতাধর বিদ্যুৎ সরবরাহের আবাসিক প্রকৌশলী সুভাষ কান্তি চৌধুরীকে। ২০০৫ সালের ২৫ মে কাউখালীতে যোগদানের পর থেকে অনেক
অভিযোগের পর ২০১৩ সালের ১৯ মে বদলীর আদেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার তার বদলীর আদেশের
সংবাদে কাউখালীর সাধারন জনসাধারণের মধ্যে বেশ উৎফুল্ল
দেখা গেছে।
উপজেলা প্রশাসনের সর্বত্র তার বদলীর
আদেশ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেক স্থানে মিষ্টি বিতরন করার সংবাদও পাওয়া গেছে।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আবাসিক
প্রকৌশলীর বদলীর আদেশের কথা তিনি শুনেছেন।
অপরদিকে কাউখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের
সভাপতি এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই প্রু জানিয়েছেন আট বছর পর
আবাসিক প্রকৌশলীকে বদলীর কারনে এবার হয়তো কাউখালী উপজেলার জনসাধারণ বিদ্যুতের সকল সুযোগ সুবিধা ভালভাবে ভোগ করতে পারবে। তিনি আক্ষেপ করে
বলেন, কাউখালী থেকে কাপ্তাই বদলী করা ঠিক হয়নি। শাস্তি মূলক হিসেবে আরো দুর্গম
এলাকায় বদলী হওয়ার দরকার ছিল।
সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে,কাউখালীতে বিদ্যুৎ বিভাগের বেহাল অবস্থার কথা দীর্ঘদিন যাবত এলাকাবাসী সহ
প্রশাসনের বিভিন্নস্থরে কর্মকর্তারা বলে আসলেও অদৃশ্য মতার জোরে আবাসিক প্রকৌশলী
সুভাষ কান্তি চৌধূরীর বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ
বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এতে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে
উঠেন। বিদ্যুৎ অফিসে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বদলী হয়ে আসলেও বেশিদিন
কাউখালীতে চাকুরী করতে পারতেন না।
কাউখালী বিদ্যুৎ অফিসে অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ দীর্ঘদিন যাবত খালী
অবস্থায় পড়ে আছে। দৈনিক মজুরীর কর্মচারী অটোরিক্সা চালক মোঃ হানিফ ও হেলপার
আফসার ছাড়া বিদ্যুৎ
বিভাগের আর কোন কর্মচারীকে পাওয়া যায়না। আবাসিক প্রকৌশলী থাকেন তার বাড়ীতে।
বিদ্যুতের কোন সমস্যা হলে তিনি সোজা জানিয়ে দে কাপ্তাই অথবা হাটহাজারীতে সমস্যা
হয়েছে। আমার করার কিছু নেই। দীর্ঘদিন যাবত কাউখালী উপজেলার প্রায় চার হাজার
গ্রাহক তার উপর ক্ষুদ্ধ ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় নয়দিন যাবত
কাউখালীতে বিদ্যুতের ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটলে জনগনের ক্ষোভ আরো বেড়ে যায়। তার কাছে
অসহায় হয়ে পড়ে পুরো কাউখালী উপজেলার জনসাধারন এবং প্রশাসন। প্রায় নয়দিন যাবত
বিদ্যুৎ বিহীন কাউখালী উপজেলার জীবন যাত্রা প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
কাউখালী বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগে যোগদান করার কয়েকবছর পর সুভাষ কান্তি চৌধুরীর
সীমাহীন অনিয়ম ও দর্নীতির বিষয় নিয়ে দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চেসহ বিভিন্ন
পত্রিকায় কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
কাউখালীতে বিদ্যুৎ বিপর্যয় এবং আবাসিক প্রকৌশলী সুভাষ চৌধুরীর বিভিন্ন অভিযোগের
বিষয়ে পত্র পত্রিকায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হলে অবশেষে বিদ্যুৎ বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদের টনক নড়ে।
গত (সুত্র নং-প্রপ্রবিদ্যুৎ(প্রশাসন)/ ১.২০১/৯৩৪,তারিখ-১৯/০৫/২০১৩ইং)১৯মে’২০১৩ইং তারিখে
উপ-পরিচালক(প্রশাসন) বিতরন দণিাঞ্চল,বিউবো,চট্টগ্রাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে কাপ্তাই
বিদ্যুৎ সরবরাহ,বিউবো,রাঙ্গামাটিতে বদলী করা হয়। তার কর্মস্থলে কাপ্তাইর
আবাসিক প্রকৌশলী মোঃ হাসির উদ্দিনকে কাউখালীতে বদলী করা হয়।
এ ব্যাপারে সুভাষ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে
চেষ্টা করা হলে ও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য বিগত চারদলীয় জোট সরকারের
সময়ে রামগড় থেকে বদলী হয়ে আসা রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার অত্যন্ত মতাধর আবাসিক
প্রকৌশলী সুভাষ চৌধুরী একজন প্রতিমন্ত্রীর সাথে জেল খেটেছেন এ আবদার নিয়ে তার
বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের পাহাড় থাকলেও বহাল তবিয়তে কাউখালীতে চাকরী করে
যাচ্ছেন।
কর্মস্থলে না থেকে মাসের অধিকাংশ সময়
হাটহাজারীর চৌধুরীহাটের বাড়ীতে নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আর এতে বিদ্যুৎ
বিভাগের সকল পর্যায়ে চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে যার ফলশ্র“তিতে কয়েক দিন পর
পর কাউখালী বাসীকে অন্ধকারে থেকে এর মাশুল গুনতে হচ্ছে।