সিএইচটি নিউজ বাংলা, ৩০ মে ২০১১
গত রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব শান্তি প্যাগোডার এ/৪ নং রুমে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সিমন চাকমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
রাত আনুমানিক দশটার দিকে তেজোদ্দীপ্ত চাকমা ওরফে অজিত এর নেতৃত্বে সন্তু গ্রুপের ছাত্রদের ৭ সদস্য এই হামলা চালায়। হামলাকারী অন্য ছয় জন হলো বিমল, সুকেশ, তনয়, প্রতিম, অনিল মার্মা ও তুহিন নামে এক বহিরাগত।
হামলাকারীরা সিমনের রুম মেট সোহেল চাকমা কেন সন্তুর নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগঠনের সদস্য অনিল মার্মার সাথে "খারাপ ব্যবহার" করেছে তার কৈফিয়ত দাবি করে। এ সময় সোহেল রুমে ছিলেন না। সিমন তাদেরকে পরে এ বিষয়ে তার সাথে কথাবার্তা বলার পরামর্শ দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয় এবং এক পর্যায়ে বহিরাগত তুহিন সিমনের বুকে ঘুষি দেয়।
সিমনের অপর রুম মেট রিটন এ সময় রুমের বাইরে গেলে হামলাকারীরা প্রতিরোধের মুখে পড়ার ভয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর আজ সকালে সিমন হামলার বিষয়ে প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিতে চাইলে প্রক্টর তার ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে হামলাকারীরা ছাত্র লীগের গুন্ডাদের দিয়ে সিমনকে এ নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
হামলাকারী তুহিন চাকমা সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য হলেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
গত ২০ মে তাদের সংগঠনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর নামে সে চট্টগ্রামের কাস্টম অফিসার দ্বিগ্বিজয় চাকমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। দ্বিগ্বিজয় চাকমা দিতে অস্বীকার করলে তুহিন তাকে হুমকি দিয়ে বলে: "যদি চাঁদা না দেন তাহলে সতর্ক থাকবেন। বউ বাচ্চাসহ তুলে নেয়া হবে।" চট্টগ্রামে এ নিয়ে পাহাড়ি সমাজের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রামের অপর এক সরকারী চাকুরিজীবী বিন্দু স্মৃতি চাকমা রাঙামাটির কল্যাণপুরে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে তার কাছ থেকেও তুহিন এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে বিন্দু স্মৃতি সন্তু লারমার কাছে গিয়ে অভিযোগ দেন কিন্তু কোন কাজ হয়নি। পরে কোন রকম ১০ হাজার টাকায় দফা রফা করতে হয়। হেমল দেওয়ানকেও কল্যাণপুরে বাসাবাড়ি করার জন্য তুহিনকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইউপিডিএফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম সিমন চাকমার ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।